জলাভূমির পানির রং উজ্জ্বল গোলাপি হয়ে উঠল হঠাৎ

প্রকাশিত: ৯:০৫ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১১, ২০২৩

জলাভূমির পানির রং উজ্জ্বল গোলাপি হয়ে উঠল হঠাৎ

অনলাইন ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের একটি জলাভূমিকে দেখে স্বপ্নে রূপকথার রাজ্যে হাজির হয়ে গেছেন ভেবে নিজের গায়ে চিমটি কাটা অসম্ভব নয়। মাওয়ির কিয়ালিয়া ন্যাশনাল ওয়াইল্ডলাইফ রেফিউজ হলো মাওয়ি দ্বীপের লোনাপানির জলাভূমিগুলোর একটি। আর এখানকার পানিই অক্টোবরের ৩০ তারিখ থেকে এমন উজ্জ্বল গোলাপি রং ধারণ করেছে। কর্মকর্তারা বলছেন, চরম খরার মধ্যে লবণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াই এর কারণ। আর এসব তথ্য পাওয়া যায় মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে।

ইউনিভার্সিটি অব হাওয়াইতে পাঠানো জলের নমুনাগুলো পরীক্ষা করে ধারণা করা হচ্ছে, জলাভূমি পানির এই নতুন উজ্জ্বল গোলাপি রঙের পেছনে আছে হ্যালোব্যাকটেরিয়া।

ইউএস ফিশ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, হ্যালোব্যাকটেরিয়া হলো এককোষী জীব, যা গ্রেট সল্ট লেক কিংবা ডেড সির মতো খুব লবণাক্ত পানির এলাকায় দেখা মেলে বেশি। এ ধরনের চরম পরিবেশে বাস করার ক্ষমতার কারণে ব্যাকটেরিয়াটিকে তথাকথিত এক্সট্রিমোফাইল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

চরম খরার মধ্যে লবণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াই পানির এমন উজ্জ্বল গোলাপি রঙের কারণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছবি: ইনস্টাগ্রামচরম খরার মধ্যে লবণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াই পানির এমন উজ্জ্বল গোলাপি রঙের কারণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
যদিও কিয়ালিয়ার আক্ষরিক অর্থ ‘লবণের আবরণ’, মাউয়ির চরম খরার কারণে জলাভূমির লবণাক্ততা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেড়েছে। ইউএস ড্রট মনিটর বলছে, পুরো দ্বীপটি গুরুতর বা বড় খরার মধ্যে রয়েছে। কিয়ালিয়া পন্ড যে অঞ্চলে অবস্থিত, সেটিকেও চরম খরা এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

পশ্চিম মাউয়ি পর্বত থেকে ওয়াইকাপু খাল কিয়ালিয়া পুকুর বা জলায় পানি নিয়ে আসে। এই খালও চরম খরার এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়। পুকুরে মিঠা পানির কম প্রবাহ থাকা জায়গাটিতে লবণের ঘনত্ব বেড়ে গেছে এবং উজ্জ্বল বর্ণের হ্যালোব্যাকটেরিয়ার জন্য একটি চমৎকার আশ্রয় হয়ে উঠেছে।

মাউয়ি কাউন্টির প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা, যার মধ্যে অন্যান্য দ্বীপ রয়েছে, গুরুতর খরার মধ্যে রয়েছে। গত আগস্টে লাহাইনা এলাকায় ভয়াবহ দাবানলের পর থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।

কীভাবে জলবায়ুসংকট হাওয়াইকে প্রভাবিত করবে বিজ্ঞানীরা, এখনো বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করছেন, তবে সামগ্রিকভাবে বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এমনকি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলেও খরা পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে মনে করা হয়।