প্রকাশিত: ৫:৪২ অপরাহ্ণ, মার্চ ১০, ২০২৫
অনলাইন ডেস্ক:
গত ১ মার্চ ফ্রান্সের প্যারিসে ২২ বছর বয়সে মারা গেছেন লুক্সেমবার্গের প্রিন্স রবার্ট ও প্রিন্সেস জুলির কনিষ্ঠ পুত্র প্রিন্স ফ্রেডেরিক। তিনি পোলগ (পিওএলজি) নামে এক বিরল জিনগত রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
প্রিন্স রবার্ট গত ৭ মার্চ এক বিবৃতিতে ছেলের মৃত্যুর খবরটি জানান। বিবৃতিটি ‘পোলগ ফাউন্ডেশন’-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। সদ্য প্রয়াত রাজপুত্র ফ্রেডেরিকই ২০২২ সালে এই ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে একজন সৃজনশীল পরিচালক হিসেবে কাজ করছিলেন।
বিবৃতিতে ফ্রেডেরিকের বাবা প্রিন্স রবার্ট লিখেছেন, ‘ফ্রেডেরিক তার রোগের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়াই করে গেছে। জীবনের প্রতি তার অদম্য ভালোবাসাই তাকে শারীরিক ও মানসিক সব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘ফ্রেডেরিক জানত, সে আমার সুপারহিরো। অনুপ্রেরণা দেওয়া এবং উদাহরণ সৃষ্টি করাই ছিল তার অন্যতম শক্তি।’
ফ্রেডেরিকের পরিবার ও প্রিয়জনদের মধ্যে আছেন—তাঁর বাবা-মা, ভাই আলেক্সান্ডার, বোন শার্লট, তাঁর কাজিন চার্লি, লুইস ও ডোনাল, বোনের স্বামী মানসুর, ফুফু ও ফুফা শার্লট ও মার্ক এবং তাঁর প্রিয় কুকুর মুশু।
সোমবার টাইম ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—বিরল ওই রোগটি নিজের শরীরে বাসা বাঁধার জন্য কৃতজ্ঞ ছিলেন প্রিন্স ফ্রেডেরিক। কারণ এতে তিনি অনেক অসাধারণ মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। একবার তিনি এক বন্ধুকে বলেছিলেন, ‘আমি জানি, এই রোগের কারণে আমি মারা যাব। হয়তো আমার বাবা-মা আমাকে বাঁচাতে পারবেন না। কিন্তু তারা ভবিষ্যতে অন্য শিশুদের জীবন বাঁচাতে পারবেন।’
পোলগ বা পিওএলজি হলো এক ধরনের মাইটোকন্ড্রিয়াল রোগ। যা পোলগ জিনের মিউটেশনের কারণে হয়। এটি কোষের ডিএনএ পুনরুৎপাদন ও মেরামতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। রোগটি মস্তিষ্ক, স্নায়ু, পেশি ও লিভারসহ একাধিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
পোলগ ফাউন্ডেশনের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য প্রফেসর ডগ টার্নবুল বলেছেন, ‘পোলগ রোগ হলো মাইটোকন্ড্রিয়াল রোগগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর। এটি ধীরে ধীরে পুরো শরীরের বিভিন্ন সিস্টেমকে অকেজো করে ফেলে এবং শেষ পরিণতি একেবারেই অনিবার্য।’
এই রোগের কারণে দৃষ্টি, চলাচল ও বাক্শক্তি হারিয়ে যেতে পারে এবং এটি প্রাণঘাতীও হতে পারে। রোগটির গড় আয়ুষ্কাল ৩ মাস থেকে ১২ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে।
প্রিন্স ফ্রেডেরিকের সহ-প্রতিষ্ঠিত পোলগ ফাউন্ডেশন গত তিন বছরে চারটি বড় গবেষণা প্রকল্পে ৩৬ লাখ ডলার অনুদান দিয়েছে। এ ছাড়াও তারা কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এক জোট হয়ে ‘প্রজেক্ট বাটারফ্লাই’ চালু করেছে। এর মাধ্যমে মূলত পোলগ রোগীদের পোস্টমর্টেম টিস্যুর ওপর গবেষণা করা হচ্ছে।
টাইম জানিয়েছে, ফ্রেডেরিক শুধু ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাই করেননি। নিজের ডিএনএ দান করে গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন, যেন বিজ্ঞানীরা প্লুরিপোটেন্ট স্টেম সেল তৈরি করতে পারেন।
মৃত্যুর আগের দিন ফ্রেডেরিক তাঁর বাবাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘পাপা, তুমি কি আমাকে নিয়ে গর্বিত?’
প্রিন্স রবার্ট বলেন, ‘ফ্রেডেরিক তখন প্রায় কথা বলতে পারছিল না। তাই তার ওই প্রশ্ন আমার কাছে বিস্ময়কর ছিল। কিন্তু তার কাছে নিশ্চিত হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, সে তার ছোট্ট কিন্তু অনন্য জীবনে যথেষ্ট অবদান রেখেছে।’
ছেলের প্রশ্নে তাই রবার্ট জবাব দিয়েছিলেন—আমরা সবাই তোমার জন্য গর্বিত, ফ্রেডেরিক।
A Concern Of Positive International Inc
Mahfuzur Rahman Mahfuz Adnan
Published By Positive International Inc, 37-66, 74th Street Floor 2, Jackson Heights, New York 11372.
Phone : 9293300588, Email : info.shusomoy@gmail.com,
………………………………………………………………………..
Design and developed by Web Nest