‘স্বৈরশাসক’ সিকে স্ত্রীর জন্মদিনে শুভেচ্ছা কার্ড দেওয়ার কথা মনে করিয়ে দিলেন বাইডেন

প্রকাশিত: ৮:৪২ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৬, ২০২৩

‘স্বৈরশাসক’ সিকে স্ত্রীর জন্মদিনে শুভেচ্ছা কার্ড দেওয়ার কথা মনে করিয়ে দিলেন বাইডেন

অনলাইন ডেস্ক:

একটি দেশের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান হওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। সেই রাষ্ট্রপ্রধান যদি হন যুক্তরাষ্ট্র বা চীনের কেউ তাহলে তো কথাই নেই। নানা কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে অনেক সময় ব্যক্তিগত জীবনের বিষয়গুলো ভুলে যান তাঁরা। এমনকি জীবনসঙ্গিনীর জন্মদিন, বিয়েবার্ষিকীও তাঁরা মনে রাখতে ভুলে যান। তবে অনেক সময়ই সমপর্যায়ের আরেক রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান সেই বিষয়গুলো মনে করিয়ে দিলে তা সাধারণ মানুষের জন্য মুখরোচক খবরে পরিণত হয়।

সম্প্রতি এমনই এক ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোয় এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থা এপেকের শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দীর্ঘ চার ঘণ্টার বৈঠকের সময় কথাচ্ছলে বাইডেন সিকে তাঁর স্ত্রীর জন্মদিনে শুভেচ্ছা কার্ড কিনে দেওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেন।

বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের স্ত্রী ফন লি-ইউয়েন আগামী ২০ নভেম্বরে ৬১ বছরে পড়বেন। ঠিক একই দিনে জো বাইডেনও তাঁর ৮১ তম জন্মদিন পালন করবেন। মার্কিন কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, বৈঠকে বাইডেন সিকে তাঁর স্ত্রী ফন লি-ইউয়েনের জন্মদিনে শুভেচ্ছা কার্ড কিনে দেওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেন।

জবাবে সি জানান, রাষ্ট্র সংক্রান্ত ইস্যুতে তাঁকে এত বেশি ব্যস্ত থাকতে হয় যে—তিনি প্রায়ই এসব বিষয় ভুলে যান। বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেওয়ায় সি বাইডেনকে ধন্যবাদও দেন। উল্লেখ্য, সি চিন পিং ও ফন লি-ইউয়েন ১৯৮৭ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

এদিকে, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পরপরই তাঁকে আবারও স্বৈরাচার বা স্বৈরশাসক বলে আখ্যা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাইডেন জানিয়েছেন—তিনি এখনো চীনা প্রেসিডেন্টকে একজন স্বৈরশাসক হিসেবেই বিবেচনা করে। এর আগেও একবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট চীনের প্রেসিডেন্টকে স্বৈরাচার বলে মন্তব্য করেছিলেন। সে সময় চীনের তরফ থেকে কড়া প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছিল। তবে এবার বাইডেন সি চিন পিংকে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে স্বৈরশাসক বলেছেন।

সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে বাইডেনকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি এখনো সি চিন পিংকে স্বৈরাচার হিসেবে আখ্যা দেবেন কিনা? জবাবে জো বাইডেন বলেন, ‘দেখুন, আমি তাঁকে স্বৈরশাসক বলেছি এ কারণে যে—মূলত তিনি এমন এক ব্যক্তি এবং তিনি এমন একটি কমিউনিস্ট দেশকে শাসন করেন যার সরকার পদ্ধতি আমাদের চেয়ে একেবারেই আলাদা।’

বাইডেনের এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল, যখন দুই দেশই অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, দুই দেশের মধ্যকার প্রযুক্তি ও বাণিজ্য খাতে ঘোষিত-অঘোষিত লড়াই এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে গেছে। এই অবস্থায় দুই দেশই পরিস্থিতি শীতল করতে শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্বের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে বাইডেনের এমন মন্তব্যের পর দুই দেশের সম্পর্ক আদৌ স্বাভাবিক হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।