প্রকাশিত: ৪:৪৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ৯, ২০২৫
অনলাইন ডেস্ক:
তৈরি হচ্ছে বিশাল এক অ্যাপার্টমেন্ট, কিন্তু নেই কোনো ইট–বালু সিমেন্ট ভাঙা বা মেশানোর বিকট কোনো শব্দ। প্রচলিত পদ্ধতি নয়, আধুনিক থ্রি-ডি প্রিন্টারের মাধ্যমে এই বাড়ি নির্মাণ করছেন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের বাসিন্দা আহমেদ মাহিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, থ্রি ডি কংক্রিট প্রিন্টিং প্রযুক্তিতে বিশ্বব্যাপী নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠান লুয়টেনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহিল। নিজের বসবাসের জন্য বাড়িটি নির্মাণ করছেন তিনি। এটিই হতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম থ্রি ডি প্রিন্টেড বহুতল ভবন।
মাহিল বলেন, ‘থ্রি ডি প্রিন্টের মাধ্যমে বাড়ি তৈরি প্রচলিত বাড়ি নির্মাণ প্রক্রিয়ার তুলনায় সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব। শুধু বিক্রির জন্য থ্রিডি প্রিন্ট করি না আমি, এর পেছনের বিজ্ঞানকে আমি বিশ্বাস করি। তাই নিজের বাড়ি বানাচ্ছি অভিনব এই প্রযুক্তির মাধ্যমে।’
জরিপ বলছে, অস্ট্রেলিয়ায় বাড়ি নির্মাণ খুব সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। গত ১৫ বছরে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে বাড়ি নির্মাণের গতি। মাস্টার বিল্ডার্সের তথ্য অনুযায়ী, একতলা একটি বাড়ি নির্মাণের সময় ৯ মাস থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৭ মাসে, যা ১৫ বছর আগের চেয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি।
অন্যদিকে, বহুতল ভবন নির্মাণের সময় ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৩ দশমিক ৩ মাস। যে কারণে দেশটিতে ক্রমেই প্রকট হচ্ছে আবাসন সংকট। মাহিলের মতে, সেই সমস্যার একটি বড় সমাধান হতে পারে এই থ্রি ডি প্রিন্ট প্রযুক্তি।
মাহিল বলেন, ‘আমার বাড়িতে শোয়ার ঘর থাকবে ৪টি এবং শৌচাগার ৫ টি। মোটামুটি বড়ই বলা যায়। এই বাড়িটির সব কাজ শেষ হতে সময় লাগবে মাত্র ৫ সপ্তাহ।
প্রিন্টিং প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে তিন সপ্তাহেই। এরপর বিদ্যুৎ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাঠামো স্থাপন করতে আর দুই সপ্তাহের মতো লাগবে। এরপরই বাড়িটি বসবাসের জন্য পুরোপুরি উপযোগী হয়ে যাবে।’
প্রচলিত নির্মাণ পদ্ধতির তুলনায় থ্রি ডি প্রিন্টিং পদ্ধতিতে বাড়ি নির্মাণ কতটা সাশ্রয়ী সে সম্পর্কিত কোনো গবেষণা এখনো হয়নি। তবে, মাহিল বলছেন, এই পদ্ধতিতে সাধারণ নির্মাণ প্রক্রিয়ার চেয়ে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কম খরচ পড়ে।
মাহিলের বাড়িটি এই প্রযুক্তিতে নির্মিত অস্ট্রেলিয়ার প্রথম বহুতল ভবন হলেও এর আগেও থ্রি ডি প্রিন্টেড ভবন নির্মাণ করা হয়েছে সেখানে। শুধু ব্যক্তি উদ্যোগেই নয়, সরকার প্রকল্পেও ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ এই প্রযুক্তি।
নিউ ওয়েলসে অস্ট্রেলিয়া সরকারের সামাজিক আবাসন প্রকল্প ‘ডাব্বো’র নির্মাণে বেছে নেওয়া হয়েছে এই পদ্ধতি। দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, এই প্রকল্পে সরকারের খরচ হয়েছে ৮ লাখ ১৪ হাজার ডলার, প্রচলিত নির্মাণ পদ্ধতিতে নির্মাণ করা হলে যা খরচ হতো, তার তুলনায় এই খরচ অন্তত ১০ শতাংশ কম।
সরকারের অন্য প্রকল্পগুলোতেও এই পদ্ধতিই বেছে নেওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন নিউ সাউথ ওয়েলসের গৃহায়ণ মন্ত্রী রোজ জ্যাকসন। বলেন, ‘থ্রি ডি প্রিন্ট আসলে গৃহায়ণ খাতে একটি গেম চেঞ্জার। সময় কম লাগে, খরচে সাশ্রয়ী, একই সঙ্গে পরিবেশবান্ধবও।’
অস্ট্রেলিয়ান হাউজিং অ্যান্ড আরবান রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাইকেল ফোথেরিংহাম জানান, থ্রি ডি প্রিন্টিং ফেডারেল সরকারের ৫ বছরে ১২ লাখ বাড়ির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সহায়তা করতে পারে, তবে এখনো অনেক বিষয় নিয়ে আরও গবেষণা ও পরীক্ষা–নিরীক্ষার প্রয়োজন আছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো এই প্রযুক্তির মাধ্যমে বাড়ি নির্মাণে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছি। বর্তমানে আমরা শুধু এর সম্ভাবনা প্রমাণ করার দিকে মনোযোগ দিচ্ছি, ব্যাপক উৎপাদনে নয়।’
ফোথেরিংহাম আরও বলেন, ‘আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, আমরা যে বাড়িগুলো নির্মাণ করছি তা যেন আমাদের জলবায়ুর সঙ্গে উপযোগী হয় এবং ভবিষ্যতে শক্তি সাশ্রয়ে অবদান রাখে।’
A Concern Of Positive International Inc
Mahfuzur Rahman Mahfuz Adnan
Published By Positive International Inc, 37-66, 74th Street Floor 2, Jackson Heights, New York 11372.
Phone : 9293300588, Email : info.shusomoy@gmail.com,
………………………………………………………………………..
Design and developed by Web Nest