এআই সনদে স্বাক্ষর করেনি যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্র, চাপে পশ্চিমা সম্পর্ক

প্রকাশিত: ৬:১৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫

এআই সনদে স্বাক্ষর করেনি যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্র, চাপে পশ্চিমা সম্পর্ক

ডেস্ক রিপোর্ট: ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ঘোষণা করা আন্তর্জাতিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সনদে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। তবে এআই উন্নয়নে উন্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া ওই ঘোষণায় ফ্রান্স, চীন ও ভারতসহ ৬০টি দেশ স্বাক্ষর করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার বিবিসি জানিয়েছে, ঘোষণার সব অংশের সঙ্গে একমত হতে পারেনি যুক্তরাজ্য। তাই তারা শুধু জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ উদ্যোগগুলোতে স্বাক্ষর করবে। এদিকে, প্যারিসে আয়োজিত ওই সম্মেলনে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর অতিরিক্ত বিধিনিষেধ প্রযুক্তির বিকাশকে ধ্বংস করে দিতে পারে।’ তিনি জানান, ট্রাম্প প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ এই সুযোগ নষ্ট করবে না। নিরাপত্তার চেয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ভ্যান্স আরও বলেন, ‘এআই উন্নয়নের জন্য এমন বিধিনিষেধ প্রয়োজন যা উদ্ভাবনকে বাধাগ্রস্ত না করে বরং উৎসাহিত করবে। বিশেষ করে ইউরোপীয় নেতাদের উচিত নতুন প্রযুক্তির বিষয়ে আশাবাদী হওয়া, ভীত নয়।’ ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ অবশ্য এআই-এর কঠোর নিয়ম প্রয়োগের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এআই প্রযুক্তিকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদের নিয়ম প্রয়োজন।’ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন বলেছেন, ‘এই সম্মেলন বাস্তব পদক্ষেপের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। আর এটিই এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।’ তিনি ইউরোপের ‘উন্মুক্ত প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন-ভিত্তিক’ এআই নীতির ওপর জোর দেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) শিল্পের উন্নয়নের জন্য মঙ্গলবার নতুন কৌশল ঘোষণা করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। সরকারের এই নতুন উদ্যোগের লক্ষ্য হলোÑ প্রতিবছর ১০ হাজার দক্ষ এআই বিশেষজ্ঞ তৈরি করা। এর পাশাপাশি আধুনিক এআই প্রযুক্তিনির্ভর শহর গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটির সরকার, যেখানে কাজ, জীবনযাপন এবং বিনোদন একসঙ্গে উপভোগ করার সুযোগ থাকবে। সিউল শহরের দক্ষিণে কেওএক্স কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত এআই সম্মেলনে এই কৌশলগুলোর ঘোষণা দেন মেয়র ও সেও-হুন। এআই প্রযুক্তি শক্তিশালীকরণের জন্য সাতটি মূল উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছেÑ প্রতিভা তৈরি, পরিকাঠামো নির্মাণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শিল্পের মধ্যে সহযোগিতা এবং বিশ্বায়ন। এদিকে দক্ষিণ কোরিয়াকে বিশ্বের দ্বিতীয় শ্রেণির এআই দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বোস্টন কনসালটিং গ্রুপ। যেখানে কানাডা, চীন, সিঙ্গাপুর, ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। এর ফলে কোরিয়ায় একটি সংকটের অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছে। সিউল শহর সরকার ঘোষণা করেছে যে তারা প্রতিবছর ১০ হাজার এআই প্রযুক্তি দক্ষ কর্মী তৈরি করবে, যার মধ্যে ৪ হাজার জন সিউল সফটওয়্যার একাডেমি থেকে এবং ৬ হাজার জন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রশিক্ষণ নেবেন। এআই-সম্পর্কিত মাস্টার্স ডিগ্রি প্রোগ্রাম সম্পন্ন করার জন্য আগামী বছর থেকে সরকার ৬০ জনকে ৬০০ মিলিয়ন ওন (৪ লাখ ১৩ হাজার ডলার) মূল্যমানের নতুন বৃত্তি চালু করবে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের অংশ হিসেবে দক্ষিণ সিউলের ইয়াংজায়ে এআই উদ্ভাবন তথাকথিত ‘সিউল এআই টেক সিটি’ তৈরি করা হবে। এই প্রযুক্তি শহরের নির্মাণকাজ শুরু হবে ২০২৮ সালে এবং এখানে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গ্র্যাজুয়েট স্কুল, বিশ্বমানের গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং সাংস্কৃতিক ও আবাসিক স্থান থাকবে। এ ছাড়া, এআই খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য আগামী বছর ৫০০ বিলিয়ন ওন মূল্যের একটি এআই তহবিল গঠন করা হবে। বিবিসি, কোরিয়া টাইমস।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ