যুদ্ধ ‘অনিবার্য’ বলে নতুন বছরে উত্তর কোরিয়ার উপগ্রহ ও ড্রোন নির্মাণের ঘোষণা

প্রকাশিত: ১১:০০ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩

যুদ্ধ ‘অনিবার্য’ বলে নতুন বছরে উত্তর কোরিয়ার উপগ্রহ ও ড্রোন নির্মাণের ঘোষণা

অনলাইন ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রের নীতি যুদ্ধকে অনিবার্য করে তুলেছে বলে মন্তব্য করেছিলেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন বছরে তিনটি গুপ্তচর উপগ্রহ, সামরিক ড্রোন এবং পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। আজ রোববার দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কেসিএনএ-এর বরাত দিয়ে খবরটি জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

পিয়ংইয়ং তার তৃতীয় প্রচেষ্টায় গত নভেম্বরে একটি গুপ্তচর উপগ্রহ স্থাপনে সক্ষম হয়। চলতি মাসে দেশটি তার সবচেয়ে শক্তিশালী আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) চালু করেছে—যা যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো জায়গায় পারমাণবিক হামলা চালাতে সক্ষম বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ওয়ার্কার্স পার্টি অব কোরিয়ার (ডব্লিউপিকে) পাঁচ দিনব্যাপী সভায় আসছে বছরের জন্য অর্থনৈতিক, সামরিক এবং পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক লক্ষ্য নির্ধারণের সময় ওয়াশিংটনের নীতির তীব্র সমালোচনা করেন কিম জং উন। তাকে উদ্ধৃত করে কেসিএনএ বলেছে, ‘আমাদের আক্রমণ করার জন্য শত্রুদের বেপরোয়া আচরণের কারণে মনে হচ্ছে, কোরীয় উপদ্বীপে যে কোনো সময় যুদ্ধ শুরু হতে পারে।’

কিম বলেছেন যে, পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতাকারী অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করা ছাড়া তার আর কোনো বিকল্প নেই। চীন ও রাশিয়া উভয়ের সঙ্গেই উত্তর কোরিয়ার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। কিম বলেন, ‘শত্রু বাহিনীর সংঘর্ষমূলক সামরিক কর্মকাণ্ডের দিকে ঘনিষ্ঠভাবে তাকালে দেখব—যুদ্ধ শব্দটি পরিণত হয়েছে একটি বাস্তবতায়। এটা কোনো বিমূর্ত ধারণা নয়।’

‘দক্ষিণ কোরিয়ার সমগ্র ভূখণ্ডকে শান্ত করতে’ প্রস্তুত থাকার জন্য তিনি উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেন। যেকোনো আক্রমণের জবাবে প্রয়োজনে পারমাণবিক বোমা প্রস্তুত রাখার জন্যও বলেছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আসছে বছরে। তার ঠিক আগে কিম জন উনের এমন ঘোষণায় রাজনৈতিক ফায়দা তোলার পরিকল্পনা রয়েছে বলে মত বিশ্লেষকদের। ২০২৪ সালের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্যন্ত সামরিক চাপ অব্যাহত রাখতে পারে পিয়ংইয়ং। সে নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জো বাইডেনের স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন। আর ট্রাম্পের সঙ্গে কিমের কেবল হুমকি আদানপ্রদানই নয়, ঐতিহাসিক কূটনৈতিক সম্পর্কও স্থাপিত হয়েছিল।

জো বাইডেনের প্রশাসন পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে আলোচনার ব্যাপারে উন্মুক্ত থাকার কথা বললেও উত্তর কোরিয়ার ওপর বেশ কয়েকটি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কারণ, উত্তর কোরিয়া জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। অন্যদিকে, কোরীয় উপদ্বীপের কাছে পারমাণবিক অস্ত্রধারী সাবমেরিন এবং বড় বিমানবাহী রণতরী সহ সামরিক মহড়া বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।