কানাডার স্বীকৃতি: রাজনীতি নয়, মানবাধিকারের দায়িত্ব

প্রকাশিত: ৭:১৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২, ২০২৫

কানাডার স্বীকৃতি: রাজনীতি নয়, মানবাধিকারের দায়িত্ব

ডেস্ক রিপোর্ট:পার্শ্ববর্তী শক্তির হুমকি, বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা ও কূটনৈতিক চাপ সত্ত্বেও কানাডার বর্তমান লিবারেল সরকার যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে মিল রেখে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে — একটি মানবিক সংকল্প যা আন্তর্জাতিক ইতিহাসে তাৎপর্য বহন করে। বিরোধীদলীয় নেতা যখন এই সিদ্ধান্তকে আক্রমণ করে বলছেন—“কার্নি দেশের গৃহ্য সমস্যা থেকে দৃষ্টি সরানোর উদ্দেশ্যে হামাস রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছেন”—তখন প্রশ্ন করা প্রয়োজন: রাষ্ট্র স্বীকৃতি কাকে ও কী জন্য দেওয়া হচ্ছে?

রাষ্ট্র স্বীকৃতি মানে কেবল কূটনৈতিক নাম মাত্র নয়; এটি মানুষের জীবনের মর্যাদা ও নিরাপত্তার স্বীকৃতি, বহির্বিশ্বের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে আন্তর্জাতিক চুক্তি করার অধিকার, এবং ধ্বংসস্তূপে পরিণত জীবিকা ও অবকাঠামো পুনর্গঠনের জন্য উন্নয়ন সহযোগিতা নিশ্চিত করার পথ। তাই এটিকে “হামাসকে পুরস্কৃত করা”–এর সঙ্গে সরাসরি জোড়া লাগানো একটি সরলীকরণ ও রাজনৈতিক চটকদারী বক্তব্য মাত্র।

এ ক্ষেত্রে জাতীয় দলের দায়িত্ব দাঁড়ায়: পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও নীতিগত মৌলিকতায় ঐক্য রক্ষা করা। যে কোনো পরিবর্তনশীল রাজনীতির বাইরে রেখে, এনডিপি এবং অন্যান্য ধারা কর্তৃক লিবারেল সরকারের পাশে দাঁড়ানো উচিত — যদি উদ্দেশ্য মানুষের জীবন রক্ষা ও একটি স্থিতিশীল, গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা হয়। নেগেটিভ রাজনৈতিক স্টান্স শুধু জনমতের বিভাজন বাড়াবে; তা ফিলিস্তিনিদের জন্য প্রকৃত উপকারে রূপান্তরিত হবে না।

আজকের বিশ্ব রাজনীতিতে সাহসী কণ্ঠগুলো দরকার, যেগুলো সহজ-সরল প্ররোচনায় ভেসে যাওয়া সস্তা সেন্টিমেন্টকে ছাপিয়ে দীর্ঘমেয়াদি মানবিক সমাধানের জন্য কাজ করবে। কানাডার জনগণের কাছে আবেদন থাকা উচিত—এই স্বীকৃতিকে কেবল এক ন্যারেটিভ হিসেবে না দেখে, বাস্তব সমর্থন, মানবিক সাহায্য, পুনর্গঠন ও রাজনৈতিক সংলাপে পরিণত করার পথে সরকার ও সমাজ একসাথে এগিয়ে আসুক। কারণ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া মানে প্রথমত: মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার—এটিই আসল প্রশ্ন ও আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।