যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে নয়া জোটের ইঙ্গিত

প্রকাশিত: ৮:১২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে নয়া জোটের ইঙ্গিত

ডেস্ক রিপোর্ট: যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তম মার্কিন সামরিক ঘাঁটির আবাসস্থল কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরায়েলের হামলায় ছয়জন নিহত হওয়ার পর উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলি যখন এই অঞ্চলে তাদের দীর্ঘস্থায়ী রক্ষক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে ক্রমশ উদ্বিগ্ন হতে শুরু করেছে, তখন বুধবার গভীর রাতে পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তানের সাথে সউদি আরবের নতুন পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।কাতারে হামলার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল উভয় সরকারের পক্ষ থেকে হামাসের সাথে কাতারের বহু বছরের মধ্যস্থতা প্রচেষ্টাকে উল্টে দেয়া হয়েছে। সাংহাইয়ের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যপ্রাচ্য গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক সান দেগাং বলেছেন, এই হামলা সউদি আরবকে অনুভব করিয়েছে যে মার্কিন সুরক্ষা অবিশ্বস্ত, যার ফলে তারা কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের সন্ধান করছে এবং পাকিস্তানের সাথে সহযোগিতা জোরদার করছে।

পাকিস্তান মুসলিম বিশ্বের বৃহত্তম সেনাবাহিনীসহ একমাত্র পারমাণবিক অস্ত্রধারী মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। দেশটি এখন রিয়াদকে আরবকে পারমাণবিক সুরক্ষা প্রদান করতে বাধ্য কিনা, জানতে চাইলে একজন ঊর্ধ্বতন সউদি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এটি একটি ব্যাপক প্রতিরক্ষা চুক্তি যা সকল সামরিক পন্থাকে অন্তর্ভুক্ত করে।’এদিকে, বেইজিংয়ের সাথে কৌশলগত মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রধারী মার্কিন মিত্র এবং চীনের একটি প্রধান সামরিক অংশীদার হিসেবে পাকিস্তান সউদি আরবকে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার সুযোগ দিয়েছে এবং নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষা করেছে। চীন-মার্কিন প্রতিযোগিতার কথা উল্লেখ করে লিন বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে এই পছন্দগুলি বৃহৎ শক্তির তীব্রতর প্রতিদ্বন্দ্বিতার পটভূমিতে উদ্ভূত হচ্ছে।’

সউদি আরব এবং পাকিস্তান উভয়ই চীনের ভালো বন্ধু। সান বলেন, ‘চীন তাদের বর্ধিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে স্বাগত জানিয়েছে, তার সমস্ত ডিম এক ঝুড়িতে, অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রতে না রেখে বিভিন্ন অংশীদারদের সাথে কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন সন্ধানও চীনের অনুকূলে।’ সউদি আরবে নিযুক্ত চীনের প্রাক্তন সামরিক অ্যাটাশে এবং গ্লোবাল গভর্নেন্স ইনস্টিটিউশনের সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট লিন লি বলেছেন, ওয়াশিংটনের নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি নিয়ে ক্রমবর্ধমান সন্দেহের কারণে নতুন চুক্তিটি সমগ্র অঞ্চলে একই ধরণের দ্বিপাক্ষিক চুক্তির জন্ম দিতে পারে। উল্লেখ্য, বিতর্কিত কাশ্মীর অঞ্চল নিয়ে ভারতের সাথে পাকিস্তানের সশস্ত্র সংঘর্ষের কয়েক মাস পর পাকিস্তাস-সউদি নতুন চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হল। মে’তে চার দিনের সংঘর্ষটিকে বেইজিং চীনা তৈরি অস্ত্রের জন্য একটি বড় উৎসাহ হিসেবে দেখেছে, যেখানে পকিস্তান বাহিনী পরিচালিত চীনা জে১০-সিই অস্ত্র ব্যবস্থা ভারতীয় বাহিনী পরিচালিত ফরাসি তৈরি যুদ্ধ বিমান রাফালেকে গুলি করে ভূপাতিত করে প্রথম বিমান যুদ্ধে জয়লাভ করে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ