প্রকাশিত: ৮:০২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৫
ডেস্ক রিপোর্ট: জনসমুদ্র যা জুবিন গার্গ ভালোবাসতেন। আজীবন তিনি মানুষ জমিয়েছেন, সুরে তালে। ভালোবেসে। তার শেষ যাত্রায়ও নেমে এলো জনসমুদ্র। আসামের ইতিহাসে অন্য কোনো তারকার জন্য এমন আবেগপূর্ণ দৃশ্য এর আগে কখনো দেখা যায়নি। ভক্তরা আজ মেনে নিতে পারছেন না মাত্র ৫২ বছরেই জুবিনের মহাপ্রস্থান। এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন জুবিন। কিন্তু সেখানেই স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে তিনি গুরুতর আঘাত পান। তড়িঘড়ি তাকে সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে নেওয়া হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। সিঙ্গাপুরের হাসপাতালেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন গায়ক। তার অকাল মৃত্যুতে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করবে আসাম। তার মৃত্যু সংবাদে আসামসহ ভারতবর্ষে শ্রোতারা শোকস্তব্ধ। কারণ তিনি কেবল নিজেকে অসমী ভাষার গানে আবদ্ধ রাখেননি। তিনি অসংখ্য হিন্দি জনপ্রিয় গান দিয়ে বিশ্বজুড়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন গায়ক হিসেবে। অজস্র বাংলা গানও তিনি গেয়েছেন সিনেমায় যার প্রায় সবই সুপারহিট। সিঙ্গাপুর থেকে জুবিনের নিথর দেহ আসামে পৌঁছেছে। তার মরদেহ গত শনিবার মধ্যরাতে সিঙ্গাপুর থেকে নয়াদিল্লির ইন্দিরা গান্ধি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি বিমানবন্দরে গায়কের মরদেহ গ্রহণ করেন এবং শ্রদ্ধা জানান। তার সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় বিদেশ প্রতিমন্ত্রী পবিত্রা মার্গারিটা এবং জাতীয় রাজধানীতে নিযুক্ত আসাম সরকারের ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা। জানা গেছে, আজ সোমবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শ্রদ্ধা জানাতে তার মরদেহ অর্জুন ভোগেশ্বর বরুয়া স্পোর্টস কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হবে। শেষকৃত্যের বিস্তারিত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আসাম মন্ত্রিসভা আজ রোববার সন্ধ্যায় তার জন্য স্থান নির্ধারণের জন্য বৈঠক করবে। সেখানে থাকবেন শিল্পীর স্ত্রী গরিমা। এর আগে জুবিনের মৃত্যুর পরপরই তার বাড়ির সামনে হাজির হতে থাকেন নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। আসামের প্রতিটি কোণে, প্রতিটি মানুষের কণ্ঠে এখন একটাই গান বাজছে ‘মায়াবিনী রাতির’। ঠিক এটাই চেয়েছিলেন জুবিন। সাত বছর আগে মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, তার মৃত্যুর পর এই গান গোটা আসাম গাইবে। ২০১৯ সালে এক অনুষ্ঠানে মায়াবিনী রাতি গানের শুরুর আগে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার মৃত্যুর পর এই গান গাইবে গোটা আসাম।’ কথা রেখেছে তার ভক্তরা। আসামের সব জায়গায় বেজে চলেছে ‘মায়াবিনী রাতি’। গানটি ২০০১ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘ধাগ’ নামের এক অহমিয়া ছবিতে। মুক্তির পরই গানটি আলোড়ন সৃষ্টি করে। অনেকে এককথায় বলেন, জুবিনের পুরো ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা সৃষ্টি এ গান। জুবিনের মরদেহ শহরে পৌঁছেছে খবর পেয়ে তাকে শেষবারের মতো এক পলক দেখতে গুয়াহাটির রাস্তায় ভিড় জমে ভক্তদের। চোখের জলে তাকে বিদায় জানালেন হাজার হাজার মানুষ। যখন লাশবাহী গাড়িতে জুবিন ফিরছিলেন তখন গণভিড়ে ছাপিয়ে যায় রাস্তাঘাট। পুরো শহরই অচল প্রায়। রাস্তার দুই পাশের ভবন থেকে, ছাদে দাঁড়িয়েও প্রিয় শিল্পীকে বিদায় দিয়েছেন আসামবাসী। জুবিনকে শেষবারের মতো দেখা, তার সাথে চোখের জল ভাগাভাগি করে নেওয়া, ভক্তদের আবেগের এ দৃশ্য যেন আসামের মাটিতে এক অমলিন স্মৃতি হয়ে থাকবে। কেবল গান নয়, জুবিনের হাসি, মাধুর্য এবং মানুষের সঙ্গে তার আন্তরিকতা ভালোবাসার বৃষ্টি হয়ে নেমেছে সর্বত্র। নিথর দেহে শুয়ে থাকা জুবিন কি দেখতে পাচ্ছেন এই জনসমুদ্র? অনুভব করতে পারছেন কত ভালোবাসা তিনি রেখে গেছেন পৃথিবীর বুকে? কে জানে!
A Concern Of Positive International Inc
Mahfuzur Rahman Mahfuz Adnan
Published By Positive International Inc, 37-66, 74th Street Floor 2, Jackson Heights, New York 11372.
Phone : 9293300588, Email : info.shusomoy@gmail.com,
………………………………………………………………………..
Design and developed by Web Nest