আবারও আফ্রিকান ইউনিয়নের বৈঠক থেকে বহিষ্কার ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত

প্রকাশিত: ৪:২৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৮, ২০২৫

আবারও আফ্রিকান ইউনিয়নের বৈঠক থেকে বহিষ্কার ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত

ডেস্ক রিপোর্ট: আফ্রিকান ইউনিয়নের সদর দপ্তরে এক বৈঠক থেকে ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতকে বের করে দেওয়া হয়েছে। ইথিওপিয়ায় নিযুক্ত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত আব্রাহাম নেগুইসেকে সোমবার আদ্দিস আবাবার আফ্রিকান ইউনিয়ন সদর দপ্তরের ম্যান্ডেলা হলে অনুষ্ঠিত বৈঠক থেকে বহিষ্কার করা হয়। রুয়ান্ডার গণহত্যা নিয়ে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সভায় তার অংশগ্রহণে একাধিক আফ্রিকান দেশ আপত্তি জানালে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। খবর আল-জাজিরার।

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সভায় কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলেছে যে, ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতি ‘অপ্রত্যাশিত’ ছিল এবং তার উপস্থিতির বিরুদ্ধে একাধিক দেশের প্রতিনিধিরা কড়া আপত্তি জানান। পরিস্থিতি এমন হয় যে, বৈঠক স্থগিত রাখতে হয় যতক্ষণ না তিনি হল ত্যাগ করেন। ঘটনার পর আফ্রিকান ইউনিয়ন এই ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে— কে বা কারা তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল তা জানার জন্য।

আফ্রিকান ইউনিয়নে ইসরাইলের পর্যবেক্ষক মর্যাদা নিয়ে বিতর্ক

২০০২ সালে আফ্রিকান ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সদস্য নয় এমন আফ্রিকার বাইরের দেশগুলোর জন্য ‘পর্যবেক্ষক মর্যাদা’ চালু করা হয়। বর্তমানে ৮৭টি দেশ এই মর্যাদা পেয়েছে। এ মর্যাদা অনুযায়ী বৈঠকে উপস্থিত থেকে কিছু আলোচনায় অংশ নেওয়া গেলেও ভোটাধিকার থাকে না।

১৯৭৩ সালে প্রথম ফিলিস্তিনি মুক্তি সংস্থা (পিএলও) এই মর্যাদা পায়, যা এখনো আফ্রিকার অধিকাংশ দেশের সমর্থন পেয়ে আসছে। গত কয়েক বছর ধরে ইসরাইল আফ্রিকান ইউনিয়নে পর্যবেক্ষক মর্যাদা পাওয়ার চেষ্টা করে আসছে। ২০২১ সালে ইসরাইল এ মর্যাদা অর্জন করলেও পরে আফ্রিকান দেশগুলোর সম্মিলিত সিদ্ধান্তে সেটি বাতিল করে দেওয়া হয়। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, ইসরাইল আফ্রিকান ইউনিয়নের পর্যবেক্ষক মর্যাদার শর্ত লঙ্ঘন করছে এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে দখলদারি অব্যাহত রেখেছে।

আগেও বহিষ্কার করা হয়েছিল ইসরাইলি প্রতিনিধি দলকে

এই ঘটনা নতুন নয়। এর আগে, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে আফ্রিকান ইউনিয়নের আদ্দিস আবাবা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে ইসরাইলি প্রতিনিধি দলকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।

তৎকালীন ইসরাইলি উপ-রাষ্ট্রদূত আফ্রিকা বিষয়ক শ্যারন বার-লি-কে নিরাপত্তাকর্মীরা অনুষ্ঠান চলাকালীন হল থেকে বের করে দেন। ইসরাইলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তখন দক্ষিণ আফ্রিকা ও আলজেরিয়ার বিরুদ্ধে ‘গুরুতর কূটনৈতিক লঙ্ঘনের’ অভিযোগ তোলে। তবে আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলো ইসরাইলের উপস্থিতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে থাকে। তারা মনে করেন, ফিলিস্তিনে চলমান দখলদারি ও গাজায় গণহত্যার প্রেক্ষাপটে ইসরাইলের উপস্থিতি গ্রহণযোগ্য নয়। ২০২১ সালে আফ্রিকান ইউনিয়নে পর্যবেক্ষক মর্যাদা পেলেও ২০২২ সালের জানুয়ারিতে আলজেরিয়ান কূটনীতিকেরা একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন— যাতে ইসরাইলের নতুন করে দেওয়া পর্যবেক্ষক মর্যাদা বাতিলের আহ্বান জানানো হয়।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ