অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ‘ভুল তথ্য প্রচারের’ অভিযোগ তুলল বেইজিং

প্রকাশিত: ৭:২২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ‘ভুল তথ্য প্রচারের’ অভিযোগ তুলল বেইজিং

ডেস্ক রিপোর্ট: দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক উত্তেজনা আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া ও চীনের সামরিক বিমানের মধ্যে সংঘর্ষের অভিযোগকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া চীনের বিরুদ্ধে ‘অসমাপ্ত ও বিপজ্জনক’ আকাশ প্রতিরক্ষা কৌশল ব্যবহারের অভিযোগ তুললেও চীন একে ‘মিথ্যা প্রচারণা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত অঞ্চলে অস্ট্রেলিয়ার একটি সামরিক বিমান টহল দেওয়ার সময় চীনের যুদ্ধবিমান কাছাকাছি এসে ফ্লেয়ার ছেড়েছে বলে অভিযোগ করেছে অস্ট্রেলিয়া। তবে চীন দাবি করেছে, অস্ট্রেলিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে এবং ঘটনাটিকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করছে। চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাং শিয়াওগাং এক বিবৃতিতে বলেন, “অস্ট্রেলিয়া আমাদের সার্বভৌমত্ব এবং স্বার্থ লঙ্ঘন করেছে এবং এরপর উল্টো আমাদের বিরুদ্ধেই মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে।”

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সংঘর্ষের ঘটনাটি সংঘটিত হয় বিতর্কিত প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জের আকাশসীমায়। চীনের সামরিক বাহিনী জানায়, তারা আইনসঙ্গতভাবেই অস্ট্রেলিয়ার বিমানকে ওই অঞ্চল থেকে বিতাড়িত করেছে এবং এটি জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য একটি বৈধ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল।

অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় চীনের এই পদক্ষেপকে ‘অপেশাদার ও ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে অভিহিত করেছে। তারা জানায়, চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (PLA) J-16 যুদ্ধবিমান অত্যন্ত কাছাকাছি এসে তাদের বিমানকে বাধা দেয়, যা তাদের সামরিক বাহিনীর জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। তবে এই ঘটনায় কোনো অস্ট্রেলীয় সেনা আহত হয়নি এবং তাদের P-8A পোসেইডন বিমানও অক্ষত ছিল।

চীন এই ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়াকে কঠোর ভাষায় সতর্ক করে বলেছে, “অস্ট্রেলিয়াকে তাদের সামরিক বাহিনীর উসকানিমূলক কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে এবং দক্ষিণ চীন সাগরে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকতে হবে।” ঝাং শিয়াওগাং আরও বলেন, “অস্ট্রেলিয়া যেন যুক্তরাষ্ট্রের অনুসারী হিসেবে সামরিক উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা না করে, এটি তাদের নিজস্ব নিরাপত্তার জন্যও ক্ষতিকর হবে।”

দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক উত্তেজনা দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক কূটনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে আছে। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো আন্তর্জাতিক জলসীমায় টহল দেওয়ার কথা বললেও চীন একে নিজেদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলে দাবি করে। এই ঘটনার ফলে অঞ্চলটিতে আরও সামরিক উত্তেজনা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ