২৪ ঘণ্টা পর অচল হবে গাজার হাসপাতালগুলো, ঝুঁকিতে হাজারো রোগীর জীবন

প্রকাশিত: ৯:৪০ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০২৩

২৪ ঘণ্টা পর অচল হবে গাজার হাসপাতালগুলো, ঝুঁকিতে হাজারো রোগীর জীবন

নিউজ ডেস্ক:ইসরায়েলের হামলায় আহত এক শিশুকে গাজার আল-শিফা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছেইসরায়েলের হামলায় আহত এক শিশুকে

তেল ফুরিয়ে আসতে থাকায় বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন গাজা উপত্যকার হাসপাতালগুলো সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা চালু থাকতে পারে। এর ফলে হাজার হাজার রোগীর জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে সতর্ক করেছে করেছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্সের (ওসিএইচএ) ওয়েবসাইটে বল হয়েছে, ‘জ্বালানি তেল ফুরিয়ে যাওয়ার ফলে ব্যাকআপ জেনারেটর বন্ধ হয়ে যাবে। তখন গাজার হাজার হাজার রোগীর জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।’

জ্বালানি ও পানিসহ মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বেশ কয়েকটি ত্রাণ সংস্থা গাজায় প্রবেশের আহ্বান জানানোর পরে এসেছে জাতিসংঘের এই সতর্কবার্তা।

গাজায় ডক্টরস উইদাউট বর্ডারে কর্মরত ব্রিটিশ-ফিলিস্তিনি সার্জন ঘাসান আবু সিত্তা বিবিসিকে বলেন, অসুস্থদের সেবা দেওয়ার হাসপাতালে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম নেই। জরুরি পরিস্থিতির মধ্যে প্রতিদিন এক মাস বা দেড় মাসের চিকিৎসা সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হচ্ছে।

জাতিসংঘের ত্রাণবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-র দপ্তরটি সরিয়ে মিসরের সীমান্তের কাছে রাফাহ শহরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সংস্থাটির ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক দপ্তরের চিফ কমিশনার ফিলিপে লাজারিনি বলেছেন, ‘ইউএনআরডব্লিউএ-এর কার্যালয় সরিয়ে রাফাহ শহরের যে ভবনে নেওয়া হয়েছে সেখানে আশ্রয় নিয়েছে হাজার হাজার গৃহহীন মানুষ।’

রোববার পূর্ব জেরুজালেমে সংস্থার সদর দপ্তরে ফিলিপে লাজারিনি বলেন, ‘শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলা হচ্ছে গাজাকে। মনে হচ্ছে, বিশ্ব তার মানবতা হারিয়ে ফেলেছে। আমরা জানি, পানিই জীবন। সেদিক থেকে দেখলে, গাজার পানি ফুরিয়ে আসছে। গাজার জীবনও ফুরিয়ে আসছে। খুব দ্রুত এখানে পানি এবং খাবার শেষ হয়ে যাবে।’

গাজায় অবরোধ চালানোকে ‘সম্মিলিত শাস্তি’ ছাড়া অন্য কোনোভাবেই দেখতে রাজি নন ফিলিপে লাজারিনি। তিনি বলেছেন, অনেক দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই অবরোধ প্রত্যাহার করতে হবে এবং সাহায্য সংস্থাগুলোকে অবশ্যই জ্বালানি, পানি, খাদ্য, ওষুধ সরবরাহ করার সুযোগ দিতে হবে। আর এটা এখনই করতে হবে।

এদিকে সমগ্র গাজা উপত্যকায় পানি সরবরাহ পুনরায় চালু করার আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি (আইসিআরসি)। জাতিসংঘে আইসিআরসি-এর স্থায়ী পর্যবেক্ষক ল্যাটিটিয়া কোর্তোয়া বলেছেন, ‘বেসামরিক নাগরিকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তা নিশ্চিত করা যুদ্ধরত পক্ষগুলোর জন্য আবশ্যক। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর সরবরাহ যত দ্রুত সম্ভব পুনরায় চালু করতে সহায়তা করার জন্য আমরা আহ্বান জানাই।’

কোর্তোয়া আরও বলেছেন, বর্তমান উত্তেজনা ও সংঘাতের সঙ্গে জড়িত সকল পক্ষের সঙ্গে কথা বলছে তাঁর সংস্থা।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের মাটিতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী দল হামাসের আকস্মিক হামলায় নিহত ইসরায়েলির সংখ্যা ১ হাজার ৪০০ ছুঁয়েছে। জবাবে ইসরায়েলও বিমান হামলা শুরু করে গাজা শহরে। হাজার হাজার বোমার আঘাতে ইতিমধ্যেই গাজা শহরের নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ৬৭০ হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানায়, নিহতদের মধ্যে ৭৫০ জন শিশু রয়েছে। এতে আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৬০০।