প্রকাশিত: ৯:০৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩, ২০২৪
যুক্তরাষ্ট্র এই প্রথমবার বিমান থেকে গাজায় মানবিক সহায়তা ফেলেছে। তিনটি সামরিক বিমান থেকে প্যারাসুটের মাধ্যমে ৩০ হাজারের বেশি খাবারের প্যাকেট ফেলা হয়েছে। জর্দানের বিমানবাহিনীর সঙ্গে মিলে যৌথভাবে এই ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন, এমন আরো সহায়তা তারা পাঠাবে গাজায়। এর আগে বৃহস্পতিবার ত্রাণ নিতে গিয়ে ১১২ জন নিহত হলে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, সহায়তার কাজে দ্রুতগতি আনবেন। সেদিন ইসরায়েলি হামলায় আরো ৭৬০ জন আহত হয় বলে জানায় হামাস। বিমান থেকে এই সহায়তা এমন সময় দেওয়া হলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলছেন, গাজার ছয় সপ্তাহের একটা যুদ্ধবিরতি আনার সব রকম প্রস্তুতি চলমান। বাইডেন প্রশাসনের এই কর্তা শনিবার জানান, ইসরায়েল একটা নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ‘প্রায় অনেকটা গ্রহণ করেছে’। নাম-পরিচয় প্রকাশ না করে যুক্তরাষ্ট্রের এই শীর্ষ কর্তকর্তা বলেন, ‘গাজায় ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি গতকাল থেকেই শুরু হয়, যদি হামাস নির্দিষ্ট কিছু যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়…যেগুলো হলো অসুস্থ, আহত, বয়স্ক ও নারী বন্দি।’ যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় কমান্ড এক বিবৃতিতে জানায়, শনিবার সি-১৩০ পরিবহন বিমান আকাশ থেকে ৩৮ হাজারের বেশি খাবারের প্যাকেট ফেলেছে গাজার উপকূলীয় অঞ্চলে। এতে আরো বলা হয়, ‘এই সহায়তাগুলো গাজায় আরো বেশি সাহায্য আনার একটা প্রক্রিয়া, যার সঙ্গে যোগ হবে সড়কপথে ও অন্যান্য পথে সহায়তা আনা।’ এর আগে অন্যান্য দেশ, যেমন- যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, মিসর ও জর্দান আকাশ থেকে গাজায় সহায়তা ফেলেছে, তবে যুক্তরাষ্ট্র এমনটা প্রথমবার করল। প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘বৃহস্পতিবারের হৃদয়বিদারক ঘটনা গাজার মানবেতর পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে এখানে আরো বেশি মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর বিষয়টি সামনে এনেছে।’ তবে সাহায্যকারী সংস্থাগুলো বলছে, এভাবে আকাশ থেকে সহায়তা ফেলা ত্রাণ বিতরণের একটি অকার্যকর উপায়। গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত মেধাত তাহের সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানান, ত্রাণ সহায়তার এই পদ্ধতি প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। তিনি বলেন, ‘এটা কি একটা স্কুলের জন্য যথেষ্ট হবে? ১০ হাজার লোক কি এতে চলতে পারবে? এভাবে প্যারাসুটের মাধ্যমে ত্রাণ ফেলার চেয়ে বরং সীমান্ত দিয়ে সহায়তা আসা ভালো।’ শুক্রবার এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে, যাতে তারা আরো বেশি মানুষ, যাদের সহায়তার দরকার সেখানে পৌঁছানোর জন্য বেশি করে ট্রাক ঢুকতে দেয় ও নতুন পথ খুলে দেয়। ’হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস আজ সোমবার ওয়াশিংটনে যুদ্ধকালীন ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গ্যান্টজের সঙ্গে দেখা করবেন যুদ্ধবিরতি ও অন্যান্য ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য। বৃহস্পতিবার গাজা শহরের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে একটি ত্রাণের বহর ঘিরে ভিড় করলে সেখানে ১১২ জনকে হত্যা করা হয় এবং ৭৬০ জনেরও বেশি আহত হয়। গাজার দক্ষিণ-পশ্চিমের দিকে উপকূলের রাস্তা আল-রাশিদ স্ট্রিট, যা সাম্প্রতিক সময়ে ত্রাণ বিতরণের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছিল, সেখানেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। হামাস বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি চালানোর জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে। কিন্তু ইসরায়েল বলছে, সেখানে সতর্কতার জন্য শুধু ফাঁকা গুলি ছোঁড়া হয় এবং মানুষ পদদলিত হয়ে মারা যায়। গাজা সাব অফিসে হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ) বিষয়ক জাতিসংঘের সমন্বয়ক গিওর্গিওস পেত্রোপোলস বিবিসিকে বলেন, তিনি ও তার দল আল-শিফা হাসপাতালে গিয়ে প্রচুর গুলিবিদ্ধ মানুষ দেখতে পেয়েছেন। এদিকে হামাস বলছে, ইসরায়েলি বোমার আঘাতে শনিবারও দক্ষিণ গাজার রাফাহ শিবিরে ১১ জন মারা গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস এই হামলাকে ‘জঘন্য’ বলে নিন্দা করেছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, তারা সেখানে ইসলামিক জিহাদের যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে একটা ‘সুপরিকল্পিত ও নির্দিষ্ট হামলা’ চালিয়েছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, উত্তর গাজায় একটা দুর্ভিক্ষ অতি অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠছে, সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে খুবই সামান্য সহায়তা যাচ্ছে এবং সেখানে প্রায় তিন লাখ মানুষের ভাগ্যে খুব সামান্যই খাবার ও বিশুদ্ধ পানি জুটছে। গত ৭ অক্টোবর হামাসের বন্দুকধারীদের হামলায় দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রায় এক হাজার ২০০ জন নিহত ও ২৫৩ জনকে বন্দি করে নেওয়ার পর গাজায় এক তীব্র মাত্রার আকাশ ও স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তার পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ৩০ হাজারের ওপর মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানাচ্ছে হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, যার মধ্যে ২১ হাজারই নারী ও শিশু। এর বাইরেও এখনো প্রায় সাত হাজার মানুষ নিখোঁজ এবং ৭০ হাজারের ওপর আহত হয়েছে। সূত্র : বিবিসি
A Concern Of Positive International Inc
Mahfuzur Rahman Mahfuz Adnan
Published By Positive International Inc, 37-66, 74th Street Floor 2, Jackson Heights, New York 11372.
Phone : 9293300588, Email : info.shusomoy@gmail.com,
………………………………………………………………………..
Design and developed by Web Nest