ইউএসএআইডির সহায়তা বন্ধে এইচআইভি ও ম্যালেরিয়ার ওষুধের তীব্র সংকট

প্রকাশিত: ৫:১২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫

ইউএসএআইডির সহায়তা বন্ধে এইচআইভি ও ম্যালেরিয়ার ওষুধের তীব্র সংকট

অনলাইন ডেস্ক:

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরেই বৈদেশিক সহায়তা স্থগিতের ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তবে তাঁর এই ঘোষণার ফলে বিশ্বব্যাপী এইচআইভি ও ম্যালেরিয়ার মতো প্রাণঘাতী রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধ সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর জন্য এই সংকট আগামী কয়েক মাস ধরে চলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলারের ওষুধ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা সরঞ্জাম, যেমন—মশারি ও অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রী বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কেনার অর্ডার দিয়ে থাকে।

তবে চলমান সহায়তা স্থগিতের ফলে আগাম পরিকল্পিত অর্ডারও আটকে গেছে, যা সরবরাহ, ব্যয় এবং সময়সীমার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাবোট, সুইজারল্যান্ডের রোচে, ভারতের সিপলা, হেটেরো, অরবিন্দসহ একাধিক সংস্থা এই স্থগিতাদেশের কারণে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে।

সুইজারল্যান্ডের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান রোচের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। বিশ্বজুড়ে রোগীদের কাছে আমাদের চিকিৎসা ও ডায়াগনস্টিক টেস্ট সরবরাহ নিশ্চিত করাই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’

তবে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বজুড়ে শুধু চলমান অর্ডারের জন্য সাময়িকভাবে ছাড়পত্র দিলেও ইউএসএআইডির অর্থ প্রদানের ব্যবস্থা কার্যকর না থাকায়, সেগুলোর সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

ভবিষ্যতে নতুন অর্ডার ও তহবিল বরাদ্দ নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তাই এসব প্রতিষ্ঠানের একটি অনিশ্চিত সময় কাটছে।

আফ্রিকান ইউনিয়নের লিয়াজোঁ ম্যানেজার ফিৎসুম লাকেও আলেমায়েহু বলেছেন, ‘আফ্রিকায় লাখ লাখ মানুষ এই চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল। ফলে এই সংকটের প্রভাব ভয়াবহ পড়তে পারে।’

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সহায়তা স্থগিতের কারণে ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রীর বাজারে মারাত্মক প্রভাব পড়বে। ইউএসএআইডির অগ্রিম চাহিদার ভিত্তিতে কোম্পানিগুলো উৎপাদন পরিকল্পনা করত। এখন এই চাহিদা অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় উৎপাদন ব্যাহত হবে, দাম বাড়বে এবং অন্যান্য ক্রেতাদের বাজেট সংকট দেখা দিতে পারে।

কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের জ্যেষ্ঠ গবেষক প্রশান্ত যাদব বলেন, এই পরিস্থিতি ‘বুলহুইপ’ প্রভাবের উদাহরণ। যেখানে সরবরাহ ব্যবস্থায় ছোটখাটো পরিবর্তনও বৃহৎ মাত্রায় প্রভাব ফেলে।

যদিও ট্রাম্প প্রশাসন ৯০ দিনের পর্যালোচনা শেষে সহায়তা পুনরায় চালুর ইঙ্গিত দিয়েছে। তবু এই ব্যবস্থার জট খুলতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।হেলথ রেসপন্স অ্যালায়েন্সের প্রধান নির্বাহী টম কটর বলেন, ‘এটি এক বিশাল জট, যা সহজে খুলবে না।’

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ