প্রকাশিত: ৫:৫৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫
অনলাইন ডেস্ক:
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ শেষ করার আলোচনায় কিয়েভকে বাইরে রাখা হবে না। তবে এই আলোচনার সাফল্য নির্ভর করবে মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বিশ্বাসের মাত্রা বৃদ্ধির ওপর। পাশাপাশি তিনি সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্য শীর্ষ কূটনৈতিক পর্যায়ের বৈঠককে দুই দেশের সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের প্রথম ধাপ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আল-আরাবিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিয়াদে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ইউক্রেন তিন বছর ধরে চলমান সংঘাত অবসানের উপায় নিয়ে প্রথমবারের মতো আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই আলোচনার একদিন পর এই অবস্থান ব্যক্ত করলেন পুতিন।
পুতিন বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠক আয়োজন করতে সময় লাগবে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, শুধুমাত্র চা খাওয়ার জন্য বৈঠক করে কোনো লাভ নেই। এ সময় তিনি গত মঙ্গলবার সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত বৈঠকের ফলাফলের প্রশংসা করেন। সেই বৈঠকে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন ইস্যুতে আলোচনার জন্য আলোচক দল গঠনে সম্মত হয়েছে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের উপায় নিয়ে আলোচনা করেছে।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে পুতিন বলেন, ‘আমার মতে, পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ পুনরায় শুরু করার জন্য আমরা প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এসব ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্য সংক্রান্ত বিষয়, বৈশ্বিক জ্বালানি বাজার এবং মহাকাশ সহযোগিতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিশ্বাসের মাত্রা বৃদ্ধি না করলে অনেক সমস্যার সমাধান অসম্ভব, যার মধ্যে ইউক্রেন সংকটও রয়েছে।’
সৌদি রাজধানীতে অনুষ্ঠিত আলোচনায় ইউক্রেন ও ইউরোপীয় সরকারগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, যা তাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। দেশগুলোর আশঙ্কা, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র এমন কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারে যা তাদের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা স্বার্থ উপেক্ষা করবে। তবে পুতিন বলেছেন, রাশিয়া কখনোই ইউরোপীয়দের বা কিয়েভের সঙ্গে আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেনি; বরং তারাই মস্কোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
পুতিন বলেন, ‘যদি তারা (ইউরোপীয়রা) চায়, তাহলে এই আলোচনা হোক। আমরা আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার জন্য প্রস্তুত থাকব। কেউ ইউক্রেনকে বাদ দিচ্ছে না। তাই যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া আলোচনার ব্যাপারে হতাশাজনক প্রতিক্রিয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।’
নভেম্বরের মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার পর থেকে একাধিকবার তার প্রশংসা করা পুতিন বলেন, মার্কিন মিত্রদের ‘অভদ্র’ আচরণের মুখে ট্রাম্প যে ‘সংযম’ দেখিয়েছেন, তা প্রশংসনীয়।
তিনি বলেন, ‘আমি ডোনাল্ডের সঙ্গে দেখা করতে পেরে খুশি হব। কিন্তু আমরা এমন এক পরিস্থিতিতে আছি যেখানে শুধুমাত্র চা বা কফি পান করে বসে ভবিষ্যৎ নিয়ে আলাপ করলে চলবে না।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, আমাদের দলগুলো এমন সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রস্তুত করবে, যা যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যার মধ্যে—শুধু ইউক্রেন বিষয়ক নয়—উভয় পক্ষের জন্য গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছানো অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’
পুতিন বলেন, ‘এটি কোনো সহজ কাজ হবে না।’ তিনি উল্লেখ করেন, ট্রাম্প, যিনি মার্কিন নির্বাচনী প্রচারণার সময় একাধিকবার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এখন ছয় মাসের সময়সীমার কথা বলছেন। তিনি বলেন, ‘এটি স্বাভাবিক, কারণ ট্রাম্প নতুন তথ্য পেতে শুরু করেছেন, যা তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করছে।’
জ্বালানি মূল্য নিয়ে পুতিন জানান, অতীতে তিনি ট্রাম্প ও সৌদি বাদশাহ একটি ত্রিপক্ষীয় আলোচনা করেছেন এবং এখন সেই কাঠামোতে একটি নতুন আলোচনা করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
পুতিন সৌদি নেতৃত্ব, বাদশাহ সালমান ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে আলোচনার জন্য ভালো পরিবেশ তৈরি করার ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় আলোচনাকে ‘উচ্চ’ মর্যাদা দিয়ে বিবেচনা করেন এবং এটিকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের ‘প্রথম ধাপ’ হিসেবে দেখেন। এ সময় তিনি যোগ করেন যে, আলোচনাকে সফল করতে হলে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের একে অপরের প্রতি ‘আস্থা’ জরুরি।
A Concern Of Positive International Inc
Mahfuzur Rahman Mahfuz Adnan
Published By Positive International Inc, 37-66, 74th Street Floor 2, Jackson Heights, New York 11372.
Phone : 9293300588, Email : info.shusomoy@gmail.com,
………………………………………………………………………..
Design and developed by Web Nest