চালের দাম বাড়ছেই; ১০ লাখ টনের বিপরীতে আমদানি মাত্র ৩২ হাজার টন

প্রকাশিত: ৫:৫৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৮, ২০২২

চালের দাম বাড়ছেই; ১০ লাখ টনের বিপরীতে আমদানি মাত্র ৩২ হাজার টন

চালের বাজার লাগামহীন হয়ে পড়েছে। গত দুই দিনের ব্যবধানে মোটা চালের দাম আরো বেড়েছে। এ নিয়ে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর সব ধরনের চালের কেজিতে ১০ থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এভাবে লাগামহীনভাবে চালের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছে স্বল্প-আয়ের মানুষ। ওএমএসের চাল কিনতে ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন ক্রমেই বড় হচ্ছে।

কিন্তু কেন বাড়ছে চালের দাম? এ প্রশ্নে ব্যবসায়ীরা বলেছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচ বেড়েছে। এর প্রভাব সরাসরি পড়েছে চালের দামের ওপর। এছাড়া চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কম থাকায় মিলে চাল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। পাশাপাশি চাল মজুতের অভিযোগও পাওয়া গেছে মিলারদের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার চলতি অর্থবছরে প্রায় ১০ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র ৩২ হাজার টন চাল আমদানি হয়েছে। এর সুযোগ নিয়েছে একশ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ীরা। তারা এখন সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়াচ্ছে।

সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) প্রতিদিনের বাজারদর নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে। সরকারের এ সংস্থাটিই জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চালের দাম কেজিতে তিন থেকে চার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। টিসিবি জানিয়েছে, বর্তমানে বাজারে ৫৫ টাকা কেজির নিচে মোটা চাল নেই। যদিও বাস্তবে দাম বেড়েছে আরো বেশি। ৫৬/৫৭ টাকার নিচে কোনো মোটা চাল নেই। দাম বেড়েছে মাঝারি মানের ও সরু চালের দামও। সবমিলিয়ে গত ৫ আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর সব ধরনের চালের কেজিতে ১০ থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

গতকাল রাজধানীর কাওরানবাজার ও তুরাগ এলাকার নতুন বাজার ঘুরে দেখা যায়, চালের বাজার বেশ চড়া। মোটা চাল ইরি/স্বর্ণা ৫৭ থেকে ৬০ টাকা, মাঝারি মানের চাল পাইজাম/লতা ৫৮ থেকে ৬৪ টাকা আর সরু চাল মিনিকেট ৭০ থেকে ৭৮ টাকা ও নাজিরশাইল ৮০ থেকে ৮৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

টিসিবির হিসাবে—মাত্র এক মাসের ব্যবধানে শুধু মোটা চাল ইরি/স্বর্ণার দাম বেড়েছে ১৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ। মাঝারি মানের চাল পাইজাম/লতা ১০ দশমিক ৩৮ শতাংশ ও সরু চাল মিনিকেট/নাজিরশাইলের দাম বেড়েছে ১৩ দশমিক ২৮ শতাংশ।

দাম বাড়ার কারণ প্রসঙ্গে গতকাল নতুন বাজারের খুচরা বিক্রেতা সাদ্দাম বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় চালের দাম বেড়েছে বলে তাদেরকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তার দোকানের বেশির ভাগ ক্রেতা গার্মেন্টস শ্রমিক। আগে প্রতি মাসে তারা যে পরিমাণ চাল কিনতেন এখন তা কমে গেছে।

কাওরান বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জন পাইকারী চাল ব্যবসায়ী বলেন, আগে যে ট্রাক ভাড়া ছিল ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা তা জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর হয়েছে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা। বাড়তি ভাড়ার এই টাকা চালের দামের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। তাই চালের দাম বেড়ে গেছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ